বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণের জন্য নিম্নলিখিত দোয়া ও আমলগুলো করা প্রয়োজন
১. বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকহারে এই দোয়া পড়া উচিত ঃ-
উচ্চারণ ঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাছি ওয়াল জুনুন ওয়াল জুযাম ওয়া মিন সায়্যিইল আসক্বাম।
অর্থাৎ : হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি শ্বেত রোগ থেকে আশ্রয় চাই। মাতাল হয়ে যাওয়া থেকে আশ্রয় চাই। কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে আশ্রয় চাই। আর দুরারোগ্য ব্যাধি (যেগুলোর নাম জানিনা) থেকে আপনার আশ্রয় চাই । (আবু দাউদ ঃ ১৫৫৬)
২. হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ)- এর ওপর কোনো কাজ কঠিন হয়ে দেখা দিত, তখন তিনি এ দোয়াটি পড়তেন ঃ-
উচ্চারণ ঃ ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা আসতাগিছ।
অর্থ ঃ হে চিরঞ্জীব! হে বিশ্ব চরাচরের ধারক! আমি তোমার রহমতের আশ্যয় প্রার্থনা করছি। (তিরমিজি শরীফ ঃ ৩৫২৪)
৩. সকল প্রকার বালা-মসিবত থেকে পরিত্রাণের জন্য দোয়াটি তিনবার পাঠ করবে ঃ-
উচ্চারণ ঃ বিসমিল্লাহিল্লাজী লা ইয়াদ্বুররু মা’আ ইসমিহি শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামা-ই, ওয়াহুয়াস সামী‘উল আলীম।
অর্থ ঃ আল্লাহর নামে, যাঁর নামের বরকতে আসমান ও জমিনের কোনো বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী। (আবু দাউদ শরীফ ঃ ৫০৯০)
৪. সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার এই দোয়া পড়বে ঃ-
উচ্চারণ ঃ আল্লাহুম্মা আফিনি ফি বাদানি আল্লাহুম্মা আফিনি ফি সাময়ি আল্লাহুম্মা আফিনি বাসারি। লা ইলাহা ইল্লা আনতা আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি। আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবিল ক্বাবারি লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
অর্থ ঃ হে আল্লাহ! আমার শরীরে সুস্থতা দান করো, হে আল্লাহ! আমার শ্রবণ শক্তিতে সুস্থতা দান করো, হে আল্লাহ! আমার দৃষ্টিশক্তিতে সুস্থতা দান করো, তুমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি কুফুরি ও দরিদ্রতা থেকে, এবং তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আজাব থেকে। তুমি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। (আবু দাউদ ঃ ৫০৯২)
৫. বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পেতে এই দোয়া পাঠ করুন ঃ-
উচ্চারণ ঃ আউজুবি কালিমাতিল্লাহিত তামমাতি মিন শাররি মা খলাক্বা।
অর্থ ঃ আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি আল্লাহর সব পূর্ণ কালিমাসমূহের উসিলায়, তাঁর সৃষ্ট সকল প্রাণীর অনিষ্ট থেকে। (মুসলিম শরীফ ঃ ৭০৫৩)
৬. বিপদগ্রস্থ বা রোগী দেখে এই দোয়া পাঠ করলে বিপদ কিংবা ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় না। ঃ-
উচ্চারণ ঃ আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আ’ফানী মিম্মাবতালাকা বিহী ওয়া ফাদ্দালাহু আ’লা কাছীরিম মিম্মান খালাক্বা তাফদীলা। অর্থ ঃ সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি তোমাকে যাতে (যে বিপদে) পতিত করেছেন, তা হতে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং আমাকে তাঁর সৃষ্টির অনেক জিনিস অপেক্ষা অধিক মর্যাদা দান করেছেন। (তিরমিজি ৩৪৩১)
৭. বাসা থেকে বের হওয়ার সময় নিম্মোক্ত দোয়া পাঠ করবে ঃ-
উচ্চারণ ঃ বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, অলা হাওলা অলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ ঃ আল্লাহর উপর ভরসা করলাম। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া পাপ থেকে ফিরা এবং পুণ্য করা সম্ভব নয়। (আবু দাউদ শরীফ ঃ ৫০৯৭)
উপরোক্ত দোয়াগুলোর পাশাপাশি নি¤েœর কাজগুলো করা
১. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা। ইসলাম এ বিষয়টির প্রতি সব সময় জোর দিয়ে থাকে। রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন- পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ। (মুসলিম শরীফ)
এ ছাড়াও আরো বহু হাদিসে সার্বক্ষণিক অজু অবস্থায় থাকার প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আমরা যদি ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী বেশি বেশি সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিয়ে হাত ধোয়ার পাশাপাশি ঘন ঘন অজু করি, তাহলে একদিকে যেমন অজুর ফজিলত পাওয়া যাবে অন্যদিকে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ হবে।
২. সম্ভব হলে প্রত্যহ জমজমের পানি, আযওয়া খেজুর, কালোজিরা ও মধু পান করবেন। কারণ হাদীস শরীফে রোগ ব্যধী থেকে মুক্তি লাভের জন্য এগুলোর অনেক উপকারীতা বর্ণিত হয়েছে।
*** এ নাজুক পরিস্থিতিতে সফর/ভ্রমণ করা, ঘুরাফেরা পরিত্যাগ করে যার যার স্থানে অবস্থান করাই আবশ্যক ***
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন- ‘যখন তোমরা কোনো এলাকায় মহামারি ছড়িয়ে পড়ার কথা শুনবে তখন তোমরা সে এলাকায় প্রবেশ করবে না। আর যদি তোমরা আক্রান্ত এলাকায় থাকো তাহলে তোমরা সেই আক্রান্ত এলাকার থেকে বের হবে না। (বুখারী শরীফ ৫৩৯৬)।
তাই এই মুহুর্তে আমাদের সবার উচিত- বেশী বেশী তওবা করা, গুনাহের কাজ বর্জন করা, বান্দার হক আদায় করা, অন্যের হক তথা জায়গা-জমি অন্যায়ভাবে নিয়ে থাকলে ফেরত দেওয়া, ইয়াতিমদের হক নষ্ট করলে তা দ্রুত ফিরিয়ে দেয়া, পিতা-মাতা ও প্রতিবেশীর সহিত ভাল আচরণ করা, অতীতে কোন কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ চেয়ে নেয়া, পাওনা-দাওনা শেষ করে প্রস্তুত থাকা, অশ্লীলতা ত্যাগ করা। ঘরে ঘরে কুরআন তিলাওয়াত করা। বেশি বেশি সদকা করা, সব সময় পবিত্র থাকা, পরিচ্ছন্ন থাকা। নামাজের মাধ্যমে বেশি বেশি বিপদ থেকে পরিত্রাণ প্রার্থনা করা।
পাশাপাশি এ বিপদের মুহুর্তে আমরা বেশি বেশি সদকা করতে পারি। কারণ সদকার মাধ্যমে বিপদ দূর হয়ে যায়।
এছাড়াও তিনি অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন বাংলাদেশ জমইয়াতে হিযবুল্লাহ ও এর অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ যুব ও ছাত্র হিযবুল্লাহর প্রত্যেক জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের, সকল সদস্য ও পীর ভাইদেরকে পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াত, খতমে সবিনা, খতমে শেফা, দরূদে নারিয়া (আল্লাহুম্মা ছাল্লি ছালাতান কামিলাতান ওয়া সাল্লিম সালামান তাম্মান আ’লা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিনিল্লাযী তানহাল্লু বিহীল উক্বাদু ওয়া তানফারিজু বিহীল কুরাবু ওয়া তুক্বদ্বা বিহীল হাওয়ায়িজু ওয়া তুনালু বিহীর রাগাইবু ওয়া হুসনুল খওয়াতিমু ওয়া ইউস্ তাস্কাল গামামু বিওয়াজহিহিল কারীম। ওয়া আ’লা আলিহী ওয়া ছাহবিহী ফী কুল্লি লামহাতিন ওয়া নাফাসিম বিআদাদি কুল্লি মা’লুমিল্লাক), দরুদে সাইফুল্লাহ, দোয়ায়ে হাসবুনাল্লাহ ও দোয়া ইউনুস খতম এবং নফল ইবাদাত করে “করোনা ভাইরাস” থেকে মুক্তি লাভের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে দোয়া করার জন্য বলেন। আল্লাহ রব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে হেফাজত করুন। আমীন!!
Leave a Reply